সিয়াম যাদের উপর ফরয

সিয়াম যাদের উপর ফরয

যে ব্যক্তির মধ্যে ৫টি শর্ত পাওয়া যাবে তার উপর সিয়াম পালন করা ফরয।

(প্রথম শর্ত: মুসলিম হওয়া)
প্রথম শর্ত হচ্ছে মুসলিম হওয়া।

(দ্বিতীয় শর্ত মুকাল্লাফ হওয়া)
যদি সে মুকাল্লাফ (শারীআ’তসম্মতভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত) হয়, তাহলে তার উপর ছিয়াম ফরয। আর মুকাল্লাফ এর বৈশিষ্ট্য হল বালিগ (প্রাপ্ত বয়স্ক),আ’ক্বিল (বুদ্ধি-বিবেক সম্পন্ন) হওয়া। কারণ, ছোট শিশু ও পাগলের উপর কোনো তাকলীফ (শারীআ’তের বিধি-বিধান) প্রযোজ্য হয় না।

(তৃতীয় শর্ত  সক্ষম হওয়া)
তৃতীয় শর্ত সক্ষম  হওয়া অর্থাৎ যে সিয়াম পালনে সক্ষম। আর যে অক্ষম তার উপর সিয়াম পালন ফরয নয়, এর দলীল আল্লাহ তা‘আলার বাণী :

-وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ

অর্থঃ “আর যে অসুস্থ অথবা ভ্রমণে আছে সে সেই সংখ্যায় অন্য দিনগুলোতে এর ক্বাদ্বা (কাযা) করবে।” [আল-বাকারাহ: ১৮৫]

আর অক্ষমতা দুই শ্রেণীতে বিভক্ত : অস্থায়ী ও স্থায়ী ।

(১.) আর অস্থায়ী অক্ষমতা উল্লেখিত হয়েছে পূর্বের আয়াতটিতে যেমন-এমন রোগী যার সুস্থতার আশা করা যায় এবং মুসাফির; এ সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য সিয়াম পালন না করা জায়েয। এরপর তাদের ছুটে যাওয়া সিয়াম কাযা করা ওয়াজিব।

(২.) আর স্থায়ী অক্ষমতা যেমন-এমন রোগী যার সুস্থতা আশা করা যায় না এবং এমন বৃদ্ধ লোক যিনি সিয়াম পালনে অক্ষম, আর তা উল্লেখিত হয়েছে তাঁর-আল্লাহ তা‘আলার বাণীতে :

-وَعَلَى ٱلَّذِينَ يُطِيقُونَهُۥ فِدۡيَةٞ طَعَامُ مِسۡكِينٖۖ

অর্থঃ “আর যারা সিয়াম পালনে অক্ষম তারা ফিদইয়াহ দিবে (অর্থাৎ মিসকীন খাওয়াবে)।” [আল-বাকারাহ : ১৮৪]

এই আয়াতটিকে ইবনু ‘আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) তাফসীর করে বলেছেন-

“বৃদ্ধ ও বৃদ্ধা যাদের অনেক বয়স হয়েছে তারা যদি সাওম পালনে সক্ষম না হয়, তবে তারা প্রতিদিনের বদলে একজন মিসকীনকে খাওয়াবে।”

(চতুর্থ শর্ত মুকীম হওয়া)
সে যেন মুকীম বা অবস্থানকারী হয়। সুতরাং সে যদি মুসাফির হয় তবে তার উপর সাওম পালন করা ওয়াজিব নয়। এর দলীল হল তাঁর-আল্লাহ তা‘আলা-বাণী :

-وَمَن كَانَ مَرِيضًا أَوۡ عَلَىٰ سَفَرٖ فَعِدَّةٞ مِّنۡ أَيَّامٍ أُخَرَۗ

অর্থঃ “আর যে অসুস্থ অথবা ভ্রমণে আছে সে সেই সংখ্যায় অন্য দিনগুলোতে এর কাযা করবে।” [আল-বাকারাহ : ১৮৫]

(পঞ্চম শর্ত সাওম পালনে বাধাদানকারী বিষয়সমূহ না পাওয়া যায়)
যদি সাওম পালনে বাধাদানকারী বিষয়সমূহ না পাওয়া যায়। আর এটি বিশেষভাবে নারীদের জন্য প্রযোজ্য। সুতরাং হায়েয হয়েছে ও নিফাস হয়েছে এতদুভয়ের উপর সাওম পালন বাধ্যতামূলক নয়। এর দলীল হল নবীর স্বীকৃতিমূলক বাণী:

أليس إذا حاضت لم تصل و لم تصم

অর্থঃ “একজন নারীর মাসিক ঋতুস্রাব হলে সে কি সালাত ও সাওম ত্যাগ করে না?” [আল- বুখারী : ২৯৮]